অলিউল্লাহ, গুরুদাসপুর প্রতিনিধি,
শীত মওসুমে হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ, প্রতিদিন প্রায় হাজার খানেক মানুষ হাসপাতালে আসছেন চিকিৎসা নিতে। কেউ চিকিৎসা নিচ্ছেন। কেউবা না নিয়েই ফিরে যাচ্ছেন। কারণ ৫০ শয্যের এই হাসাপাতালটি দীর্ঘদিন ধরে ৫ চিকিৎসক দিয়েই চলছে।
এতে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ৩ চিকিৎসককে উপজেলা হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালটিতে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) না থাকায় আঃন্ত বিভাগের চিকিৎসা ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়েছে। গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে এমন পরিস্থিতি।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ২০০৯ সালে এই হাসপাতালটি ৩১ শয্য থেকে ৫০ শয্যে উন্নীত করা হয়। কিন্তু চিকিৎসক ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংকটে বদলায়নি সেবার মান। ভৌগলিক কারণে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চলনবিলের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় উপজেলার ৩ লাখ মানুষ ছাড়াও আশপাশের সিংড়া, বড়াইগ্রাম, তাড়াশ ও চাটমোহর উপজেলার বহু মানুষ এই হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। অথচ বিশাল এই জনগোষ্ঠির চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়নি।
তাড়াশ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আকলিমা বেওয়া ও বড়াইগ্রামের জমিরননেছাসহ অন্তত ১০ জন রোগী জানালেন, অনেক সকালে এসেও তারা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। সুবিধা মতো মিলছে না চিকিৎসা সেবা। চিকিৎসক কম থাকায় তাদের মতো শত শত মানুষের এমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, হাসপাতালটিতে ২৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা। এরমধ্যে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এবং একজন করে জুনিয়র কনসাল্টেন্ট শিশু, গাইনী বিশেষজ্ঞ, কার্ডিওলজি, এ্যানেসথেশিয়া, দন্ত, চক্ষু, ইাউনানী, চর্ম ও যৌণসহ ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এদের মধ্যে এ্যানেসথেশিয়া চিকিৎসক থাকলেও ইউনানী চিকিৎসক ডেপুটেশনে নাটোর সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ১৭ জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র মিলিয়ে ৮ জন মেডিকেল অফিসার চিকিৎসা দিচ্ছেন।
এদিকে সেবীকা (নার্স) ৩১ জনের মধ্যে ২৭ জন আছেন। এছাড়া তৃতীয় শ্রেণির ৭৩ জনের মধ্যে ৫৫ জন এবং চতুর্থ শ্রেণির ২৮ জনের মধ্যে ১৪ জন কর্মরত আছেন। জনবল কম থাকায় চিকিৎসার পাশপাশি হাসপাতালে অন্যান্য সেবার মানও নাজুক হয়ে পড়েছে।
গতকাল রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের আঃন্ত ও বহির বিভাগ মিলিয়ে ৪ জন চিকিৎসক চিকিৎসা দিচ্ছেন। এরমধ্যে এনসিডি কর্ণারে একজন ও দুইজন চিকিৎসক সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এছাড়া জরুরী বিভাগের চিকিৎসক দিয়েই চলছে ভর্তি থাকা রোগীদের চিকিৎসা সেবা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, সীমিত জনবল নিয়ে করোনা মহামারীসহ শীতকালীন রোগীদের নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। তবুও সিজারিয়ান অপারেশনসহ সব ধরণের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।