আমি যেখানে বসে আছি, ঠিক আমার বাম পাশে একটা বেঞ্চ পরে মাঝখানে সে বসেছিল। তার দিকে চোখ পরতেই আমি যে মূর্তিমান হয়ে গেলাম। পৃথিবীটা যেন কিছুক্ষনের জন্য থেমে গেল! গায়ে তার হলুদ আভা, কপালে কালো টিপ, চোখ তার কাজল বরন শুশ্রী ভ্রুলতা যেন গড়েছে শান্ত নীড়, আধা কোচকানো রেশমি দোলানো চুল আমার শহড় করেছে নীরবতার ভীড়। এরই মাঝে আমার স্তব্ধতা কেটে গেলো, আমি ভাবলাম পৃথিবীটা সত্যিই কি থেমে গিয়েছিল! সে যে মায়াবী, হাজার বছরের মায়া যেন তার কাছেই লুকায়িত। সে তার বান্ধবীদের সাথে কথা বলছে আর মৃদু মৃদু হাসছে। কথা বলতে বলতে মুখের সামনের চুলগুলো হাতের আঙ্গুল দিয়ে সরাতে সরাতেই আবার সামনে চলে আসছে। হঠাত করেই তার দিকে আমার চোখ পড়ে গেল। আমি অনেকক্ষন ধরে তাকে ফলো করছি। আর এমনি সময় স্যার বলে উঠলো “এই ছেলে উঠে দাড়াও” আমি বললাম, স্যার আমাকে কিছু বলেছেন? হ্যাঁ, তোমাকেই বলছি। ক্লাশ বাদ দিয়ে ওদিকে কি দেখছো? না স্যার কিছু না….এমনিতেই। স্যার: না তুমি কি দেখছো সত্যি করে বল? আমি দেখলাম স্যারতো নাছোড় বান্ধা। আমি বললাম স্যার পরী দেখছি। এই কথা বলার পর ক্লাশের সবাই হেসে উঠলো। আর আমার দিকে তাকিয়ে রইল। স্যার রেগে গিয়ে বলল “ফাইজলামির আর জায়গা পাওনা” যাও তুমি ক্লাশ থেকে বের হও। আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে বললাম স্যার আমাকে মাফ করে দিন। স্যার: না তুমি এখনি বের হও। আমার আর কি করা, আমি মাথা নিচু করে বের হয়ে গেলাম। ক্লাশ শেষে আমি ও আমার বন্ধু কলেজের বারান্দায় অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষন পর দেখলাম ওরা তিন বান্ধবি একসাথে আসতেছে আমি বন্ধুকে বললাম… ওদের ডাক দিতে। বন্ধু বললো এই যে আপু? এদিকে একটু আসবেন, কথা ছিল। ওদের একজন বললো কি বলবেন। আমার বন্ধুটা বললো আমি না ও কিছু বলবে হয়তো। আমি তাকে বললাম, তোমার কি নাম? সে বললো আপনার সাহস তো কম না, আপনি আমাকে তুমি করে বলছেন। আমি বললাম, আমরা যেহেতু একই ক্লাশে পড়ি তুমি করে বলতে দোষের কি? সে বললো নাম দিয়ে কি হবে? না জানতে খুব ইচ্ছে করেছে তাই। সে বললো, আমি যাকে তাকে নাম বলি না। ঠিক আছে আমি রেজিস্টার দেখে জেনে নিবো। সে বললো, আপনি তো দেখছি….? পাশ থেকে ওর এক বান্ধবি বললো, নামটা বলে দে, ওরা তো আমাদেরই বন্ধু তাই না? সে বললো, আমার নাম দীপান্বিতা। আমি বললাম, সুন্দর… সুন্দর… সুন্দর….। সে বলল, কি বলতেছেন? আমি বললাম কিছুনা। এখন হয়েছে, আমি যেতে পারি? কিন্তু যাবার সময় যে একটা মুখের ভেংচি ও কপালের ভাজ দেখালো, তাতে কিছুটা অহংকার প্রকাশ করলো মনে হলো কিন্তু আমার কাছে ব্যাপারটা আরও আকর্ষনীয় মনে হল। আমি যতক্ষন তার সাথে কথা বলেছিলাম। আমার বন্ধু পেছন থেকে হাত দিয়ে ধরে রেখেছিল। কারন লাইফে এই প্রথম কোন মেয়ের সাথে কথা বলা।

